ইবি ছাত্রলীগ কর্মীকে জুতার মালা পরিয়ে মারধর

ইবি প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগ কর্মী আবদুল হাফিজকে মারধর করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৫ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে সন্ধ্যা ৭টা থেকে সাদ্দাম হোসেন হলের ৩৩৩ নম্বর রুমে হাফিজ ঘিরে রাখেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক তাকে নিরাপদে বের করে দেওয়ার উদ্যোগ নেন। হল গেট পার হলে শিক্ষার্থীরা তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে মারধর করেন। মারধরে মুখে ওই ছাত্রলীগ কর্মী দৌড়ে ইবি থানায় আশ্রয় নেন।
জানা গেছে, হাফিজ পরিসংখ্যান বিভাগের মাস্টার্স ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়া, আওয়ামী সরকারের সময় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে চলাফেরা করা এবং হলের ডাইনিং সহ বিভিন্ন দোকানে বাকি খাওয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, বিভাগের রিটেক পরীক্ষায় অংশ নিতে ক্যাম্পাসে আসেন হাফিজ। বিকালে হল গেটে নিষেধ করার পরও পাঁচ ছয়জনকে সঙ্গে নিয়ে জোরপূর্বক হলে প্রবেশ করেন। হাফিজ হলের ৩৩৩ নম্বর রুমে রয়েছেন জানতে পেরে শিক্ষার্থীরা তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘হৈ হৈ রৈ রৈ, ছাত্রলীগ গেলি কই’-সহ ছাত্রলীগ বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন। প্রায় এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক তাকে নিরাপদে বের করে দিতে চাইলে হল গেটে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হাফিজকে জুতার মালা পরিয়ে দেয়। শেষে মারধর করে ধাওয়া দিলে তিনি দৌড়ে থানায় গিয়ে আশ্রয় নেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন, পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবির সমন্বয়কদের উপস্থিতিতে বাকি টাকা পরিশোধের প্রেক্ষিতে তাকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হবে মর্মে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে হাফিজ বলেন, পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ক্যাম্পাসে এসেছি। কিন্তু এ রকম কিছু হবে ভাবিনি। তারা আমাকে অন্য হাফিজ (শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক) ভেবেছিলো, যে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের মারধর করতেন। আমি সেই হাফিজ না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক তানভীর মন্ডল বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের শান্ত করে তাকে নিরাপদে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। পরে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে তিনি থানায় আশ্রয় নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক ড. এয়াকুব আলী বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী ফোন দিলে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। আগামী ৭ তারিখের মধ্যে তাকে বাকি টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে৷ টাকা পরিশোধ করলে তাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হবে।